ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান করে প্রকাশ্যে সভা করায় আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম এখন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ব্যর্থ করতে নিয়মিত আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সরকার বিরোধী আন্দোলনে অর্থ যোগানদাতা সাবেক এই আমলা।
আওয়ামী লীগ নেতাসহ সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে নাসিমের মাস্তি করার একটি ভিডিও এর আগে ভাইরাল হয়েছে। স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর বিদেশে বসে যারা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছে তাদের মধ্যে অন্যতম রেহানার ফান্ড ম্যানেজারখ্যাত ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম।
আলাউদ্দিন নাসিম এক সময় ছিলেন পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার। এর বাইরে শেখ রেহানার ফান্ড ম্যানেজার হিসেবে গত দেড় দশক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসহ মাদক ব্যবসা, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ঘুষ-চাঁদাবাজির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ- কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছেন এই সাবেক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও সংসদ সদস্য। নাসিমের হাত ধরেই পরিচালিত হতো দেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। ঢাকায় মদের ব্যবসা এবং ফেনীতে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে স্বর্গরাজ্য গড়েন। তার নানান অপকর্ম ও দুর্নীতির খবর প্রচারিত হওয়ায় নড়ে চড়ে বসে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করায় ২ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের উপপরিচালক মো. ফারুক আহমেদ বলেন, দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমকে ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলি করে ১৩ জনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ফেনীজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে নাসিম এখন কোথায়? ফেনীতে নাসিমের নামে তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে। আলাউদ্দিন নাসিমের নির্দেশেই ফেনীতে ছাত্র-জনতাকে গুলিতে হত্যা করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের নির্দেশে জুলাই ও আগস্ট মাসে ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালীতে চলে ছাত্র হত্যা।
তিনি কয়েক হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সচিবালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ২০ পার্সেন্ট কমিশন নিতেন আলাউদ্দিন আহমেদ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ফেনী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের মানুষের কৃষিজমি জিম্মি করে কাউকে দিয়েছেন স্বল্পমূল্য, আবার কেউ জমি লিখে দিতে না চাইলে সেই জমি তিনি দখল করে নিয়েছেন।