আলহামদুলিল্লাহ, মুসলিম স্টুডেন্টস কমিউনিটির আয়োজনে বদরের যুদ্ধের গুরুত্ব তরুণ ছাত্রসমাজের নিকট উপস্থাপন করার জন্য এক অনবদ্য সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারটি ছিল ইতিহাসের এক মহিমান্বিত দিনে, যখন সত্য ও মিথ্যার মধ্যে অবিস্মরণীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, এবং ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছিল।
এই সেমিনারে প্রথমেই সম্মানিত উস্তাদ আবদুল হালিম এই মহান যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তরুণদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি দিলরোড মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস এবং চাঁন জামে মসজিদ, ঢাকা এর খতিব। তিনি বদরের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসলামী ইতিহাসের সেই চিরকালীন শৌর্যবীর্য, সাহসিকতা এবং কুরআনিক নির্দেশনা ব্যাখ্যা করেন। তরুণ সমাজের নববী আদর্শ থেকে বিচ্যুতির নেপথ্যে জাফর ইকবালদের মতো নাস্তিকদের সমালোচনা করেন। পাশাপাশি, উস্তাদ আফনানুর রহমান আশরাফী, বদরের যুদ্ধের তরুণ সাহাবীদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করে আধুনিক যুগে মুসলমানদের জিহাদের গুরুত্ব যথাযথভাবে তুলে ধরেন। এছাড়াও তিনি ইসলামী নেতৃত্বের মূলনীতি তরুণদের সামনে ফুটিয়ে তোলেন, যা বর্তমান যুগে মুসলিম যুবকদের জন্য এক অনুপ্রেরণা।
সেমিনারের শেষাংশে বক্তৃতা দেন উস্তাদ ফাহিম মাহমুদ, মুহাদ্দিস, জামিয়া কাসেমিয়া নানুতুবি, মালিবাগ এবং খতিব, আহমদবাগ জামে মসজিদ। তিনি ইসলামী নেতৃত্ব এবং শাসনব্যবস্থা সম্পর্কিত গভীর বক্তব্য প্রদান করেন, যেখানে বদরের যুদ্ধের চিরন্তন শিক্ষা ফুটে উঠে। তিনি বলেন, “বদরের যুদ্ধ শুধুমাত্র এক ঐতিহাসিক বিষয় নয়, এটি ছিল সত্যের বিজয়ের প্রতীক, যা আমাদেরকে ইসলামি শাসনব্যবস্থা, ন্যায়বিচার এবং ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার পথ দেখিয়েছে।” এছাড়াও তিনি তরুণদের জীবন গঠনে পরামর্শ নেওয়ার গুরুত্ব আলোচনা করেছেন। সাথে সেকুলারিজম এবং বর্তমান বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে ইসলামের সংঘর্ষজনিত বিষয়টি তুলে ধরেন।
সেমিনারের আয়োজন ছিল ১৭ রমাদান ১৪৪৬ হিজরি, ১৮ মার্চ ২০২৫ ঈসায়ী, বিকেল ৩টা থেকে মাগরিব সালাত পর্যন্ত, যেখানে রমাদান ট্যালেন্ট হান্ট ২০২৫ (যা ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়) কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয় এবং উপস্থিত সবার জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করা হয়। সেমিনারের শেষে সেমিনারের বক্তব্যের উপর একটি চমৎকার কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যেখানে প্রতিযোগীরা প্রশ্নের উত্তর প্রদান করে নগদ পুরষ্কার জিতে নেয়। বিজয়ীদের অনুপ্রাণিত করার জন্য আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হয়। সেমিনারের উপস্থিতির বেশিরভাগই স্কুল এবং কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী ছিলেন।
এছাড়াও, সেমিনারে মুসলিম যুবসমাজকে নবিজীর ﷺ আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠায় শহীদ হওয়ার প্রত্যয়ে লড়াই করার আহ্বান জানানো হয়। মুসলিম স্টুডেন্টস কমিউনিটির সদস্যদের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় এই সেমিনার সফলভাবে আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে।
এই সেমিনারের সফলতা তখনই পূর্ণ হবে, যখন এটি মহান রব্বুল আ’লামীন, রহমানুর রহিম এর নিকট কবুল হবে—এমন মন্তব্য করেন মুসলিম স্টুডেন্টস কমিউনিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক, মোহাম্মদ উল্লাহ আজিম চৌধুরী ওসমান। “আমাদের উদ্দেশ্য শুধু সেমিনার আয়োজন করে শো-অফ করা নয়, বরং ইসলামি আদর্শে তরুণদের উজ্জীবিত করা, যাতে তারা ইসলামি বিপ্লবে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে,” তিনি আরও যোগ করেন।
সর্বপরি, এটি ছিল এক যুগোপযোগী এবং জ্ঞানময়ী সেমিনার, যা মুসলিমের জীবনে জিহাদের গুরুত্ব এবং ইসলামী শাসনব্যবস্থার নীতিকে তরুণদের হৃদয়ে গভীরভাবে স্থান করে দিয়েছে।