তসলিমা নাসরিন দেশের একজন সমালোচিত ও নিষিদ্ধ লেখিকা। তিনি নির্বাসিতও বটে, বাংলাদেশে আসতে না পারলেও তার লেখা নিষিদ্ধ সব বই যেনো এবারের বই মেলাকে কলঙ্কিত করলো আরও একবার। তার লেখায় সব সময়ই প্রকাশ পায় ইসলাম বিদ্বেষ। বারবার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে উলঙ্গ সব কবিতা-উপন্যাস লেখেন এই লেখক।
আপস:-
শুধু যে নিজ দেশে নিষিদ্ধ তসলিমা তা কিন্তু নয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও নিষিদ্ধ তিনি। বর্তমানে ভারতের দিল্লিতে অবস্থান করলেও তার জেনো লেখতে হবে বাংলা ভাষা আর ইসলাম ধর্মকে নিয়েই। বাংলাদেশে তার লেখা বই নিষিদ্ধ থাকলেও অমর একুশে বই মেলাতেই দেখা মিললো তার বই। এটি নিয়েই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়ে সেই স্টল আর লেখককে ঘিরে। সব্যসাচী নামের সেই স্টলে তসলিমার মতো নাস্তিকের লেখা নিষিদ্ধ বই দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়ে আমজনতা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, একদল শিক্ষার্থী সব্যসাচী স্টলে তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি করা দেখে সেখানে ভিড় করেন। শতাব্দী ভব নামে আওয়ামী পন্থী একজন লেখক তখন সেখানেই বসে ছিলেন। তসলিমা নাসরীনের বই বিক্রি কেন করছেন শিক্ষার্থীরা জানতে চাইলে তাদেরকে জঙ্গী বলে আখ্যা দেন এ লেখক। একপর্যায়ে জয় বাংলা স্লোগান দেন তিনি আর এতেই শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এরপর পুলিশ এই লেখককে সরিয়ে নিতে এলে দর্শনার্থীরা লেখকের উদ্দেশ্যে ধর ধর, মার তাকে বলে চিৎকার করতে থাকেন। সবাই তাকে কানে ধরে ক্ষমা চাইতে বলেন। একপর্যায়ে তিনি দুই হাত জোড় করে দর্শনার্থীদের কাছে ক্ষমাও চান। পরে পুলিশ তাকে বইমেলা থেকে বের করে নিয়ে যায়। এ সময় দর্শনার্থীরা ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘স্বৈরাচারের দালালেররা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। স্বৈরাচার হাসিনা নিজেও ইসলাম বিদ্বেষী ছিলেন। মুখে তিনি ধার্মিক বুঝালেও অন্তরে ছিলো নাস্তিকদের দালাল। হাসিনা পালানোর ৬ মাস হলেও এখনো নির্মূল হয়নি তার দোসররা। মেলা প্রঙ্গনের এই ঘটনা যেনো আবার মনে করে দিলো স্বৈরাচার হাসিনার সেই ১৬ বছরের শাসনামলকে।
হাসিনা বিগত ১৬ বছরে কায়েম করেছিলো মব জাস্টিস। এটির জনক হাসিনা যখন যাকে যেভাবে ইচ্ছে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করতেন আবার গুমও করতেন। মেলা প্রঙ্গনের ঘটনাটি নিয়ে কথা বলেছেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ উর রহমান। তার মতে সব্যসাচীর এই স্টলে তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি নিয়ে আগের রাতেই ফেসবুকে লেখালেখি হচ্ছিলো মব তৈরী হচ্ছিলো। এসব জানার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন চুপ ছিলো? তারা কেন মেলা প্রঙ্গনে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখলেন না, এমন প্রশ্নই রাখেন তিনি।
তসলিমা নাসরিনের মতো নাস্তিকের লেখা বই কেন দেশের বই মেলায়? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে নেটিজেনদের মনে। তাদের মতে তসলিমার লেখা বই তো নিষিদ্ধ বাংলাদেশে। এরপরও কি করে বই মেলার মতো জায়গায় তার বই খোলামেলা বিক্রি হচ্ছে? সব জানার পরও সব্যসাচীকে কেন স্টল বরাদ্দ দেওয়া হলো এমন প্রশ্নও রাখেন অনেকে।