সময়ের সংবাদঃ ২০০৯ সালে রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে কমিশন গঠন করার কথা বলেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। তবে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ২টি মামলা বিচারাধীন থাকায় আপাতত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে এসেছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চকে এ তথ্য জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।
বিডিআর হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি লিখেছেন, এতে আইন মন্ত্রণালয়ের কোনো মতামতের উল্লেখ করা হয়নি। এ ধরনের কমিটি গঠন করার এখতিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, হাইকোর্টের আদেশ অনুসারেও এটি করার কথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।
এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমজনতা ধিক্কার ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। গতকাল রোববার রাত থেকেই অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী ও উদ্বিগ্ন পাঠক দৈনিক ইনকিলাবে ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছেন, এ তথ্য সত্য না মিথ্যা। এছাড়াও দৈনিক ইনকিলাবের ফেসবুক পেইজে হাজারো মেসেজ দিয়েছেন ফলোয়ার্সরা।
নেটিজেনরা বলেন, গুম কমিশন না করা মানে- বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচারও করা হবে না। এর দায় আইন মন্ত্রণালয়কেও নিতে হবে। এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইখতিয়ার বলেই পার পাওয়া যাবে না। মানুষ এখন বোকা এতটা নয়। একটা স্ট্যাটাস দিয়ে বলে দিলেন আই ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল যেতে উনার মন্ত্রণালয়ের কোন দায় নাই যদি সত্যি তাই হয় তাহলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে উনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে এবং সর্বোপরি প্রধান উপদেষ্টার সাথে আলাপচারিতা করে কমিশন গঠন করার ব্যবস্থা কেন করলেন না? পিলখানা গণহত্যার বিচার নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে। ভারতীয় দালাল আর আওয়ামী অফিসার ছাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণ এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়, সশস্ত্র বাহিনীর অভ্যন্তরে ও এ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক অসন্তোষ। অসংখ্য অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারা তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক ইউটিউব এ এসে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন এরই মধ্যে।
পিলখানা গণহত্যার সম্পূর্ণ বিচার করা না গেলে বাংলাদেশের পতাকায় পুরনো শকুনদের খামচে ধরা নখর উপড়ে ফেলা যাবে না। পিলখানা হত্যাকাণ্ড কে করেছে, এটা এখন কারো না জানার বাকি নেই।
বিভিন্ন সূত্রে থেকে জানা যায়, ভারতের ‘সেবাদাসী’ খ্যাত গণহত্যার সাথে সরাসরি জড়িত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা, মির্জা আজম, নানক, শেখ পরিবারের সদস্য শেখ সেলিম ফজলে নূর তাপস, ভারতীয় ব্ল্যাকক্যাট, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে এবং অংশগ্রহণে এই হত্যাকাণ্ডের মূল নৃশংসতা ঘটে। এর পেছনে ছিল অনেক দিনের নিখুঁত পরিকল্পনা। সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরেরও কিছু চিহ্নিত ক্রীড়ানক ছিল। এ হত্যার এমন কিছু ভিডিও রয়েছে যাতে দেখা যায়- কিছু লোক হিন্দিতে কথা বলছে। এতে বুঝা যাচ্ছে ভারতের ইন্ধনে তাদের সরাসরি অংশগ্রহণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ভারতের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির সরাসরি ‘শিষ্য’ মইন ইউ আহমেদসহ ফোর্সের বাইরে থাকা কিছু নরপিশাচের একনিষ্ঠ চেষ্টায় এই হত্যাকাণ্ড করে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা হয়। এর মাধ্যমে ১৭ বছরের জুলুমের রাজত্ব কায়েম করতে সফল হয় দুর্নীতির ‘মক্ষ্মী রানী’ হাসিনা।
নেটিজেনরা আরও লিখেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেখানে উন্নয়ন হচ্ছে ঠিক এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে বিতর্ক সৃষ্টি করতে একটা মহল উঠে পড়ে লেগেছে। আমাদের মনে হয় আসিফ নজরুল ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে: জেনারেল জাহাঙ্গীর এর দায় কোনভাবে এড়াতে পারেন না। কলঙ্কজনক অধ্যায়ের বিচার যদি প্রকৃতপক্ষে উনারা চাইতেন তা হলে কেন তিনি এই কমিশন গঠন করবেন না? এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা।
তারা লিখেন, অতি দ্রুত প্রশাসনের সব জায়গা থেকে আওয়ামী দোসর ও ভারতের এজেন্টদের বিতাড়িত করতে হবে। নয়তো এই আন্দোলন সুফল আসবে না। সরকারকে কিছু নরপিশাচ, জালিম, বেইমান ও খুনির দলেরা একের পর এক বিকর্ত সৃষ্টি করতে চাইছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখে কালিমা লেপন করাই তাদের উদ্দেশ্য।
আহমেদ ইমতিয়াজ লেখেন ধিক্কার ধিক্কার ধিক্কার!! এমন সিদ্ধান্তে হতভম্ব হয়ে গেলাম, যারা আমাদের সূর্য সন্তানদের হত্যা করেছে সেই সন্ত্রাসীদের বিচারের ব্যাপারে এত অনীহা? বুঝাই যাচ্ছে কাকে বাঁচাতে চাচ্ছেন!
শফিকুল হায়দার রনি লেখেন যতই চেষ্টা করো পাবলিককে বোকা বানাইতে পারবা না, আমরা বুঝি কাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছো তোমরা। তোমাদের প্রভুরা তোমাদেরকে প্রটেক্ট করতে পারবে না এই সিটে কতদিন থাকবা? দেখো নাই হাসিনা কিভাবে পলাইছে?
ইউটিউবে সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন সেনাপ্রধান মহোদয় সেই দিন পিলখানা সামনে ট্রুপস নিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু তারেক আহমেদ সিদ্দিকীর নির্দেশে ঢুকতে পারেন নাই। এ থেকে বোঝা যায় তিনি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং বিহিত করার ব্যাপারে উদ্যোগী আছেন এবং ছিলেন, উনাকে অনুরোধ করব এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে কারণ শত হলেও তারা আমাদের সেনাবাহিনী অফিসার ছিলেন এবং তাদের স্ত্রী এবং সন্তানরা লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিল সেদিন।