দরুদ শরিফ শুধু কিছু শব্দের সমষ্টি নয়, এটি রাসুলুল্লাহ (صلى الله عليه وسلم)-এর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রকাশ। মহান আল্লাহ্ নিজেই কুরআনে নবীজীর (صلى الله عليه وسلم) প্রতি দরুদ পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন এবং আমাদেরও এটি পাঠ করতে বলেছেন—
“إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ ۚ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَّلِّمُوا تَسْلِيمًا”
যখন থেকে তিনি নবী খেতাবে ভূষিত তখন থেকেই আল্লাহ এবং ফেরেশতাকুল নবীর উপর শান্তি এবং অনুগ্রহ প্রেরণ করেন। অতএব, হে ইমানদাররা তোমরাও তোমাদের আপন নবীর উপর যথাযথ সম্মান এবং ভালোবাসার সহিত দুরুদ পাঠ করো।
(সূরা আল-আহজাব: ৫৬)
সেই দরুদই সর্বোত্তম, যা হৃদয়ের গভীর থেকে ভালোবাসা ও আত্মিক টান নিয়ে পাঠ করা হয়।
নবীজী (صلى الله عليه وسلم) হলেন মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। তাঁর প্রতি ভালোবাসা মানে শুধু মুখে দরুদ পাঠ করা নয়; বরং তাঁর জীবনাদর্শ অনুসরণ করাও এর অন্তর্ভুক্ত। যে ব্যক্তি দরুদ পাঠের সময় নবীজীর (صلى الله عليه وسلم) চরিত্র ও গুণাবলী নিয়ে ভাববে, তাঁর সুন্নাহ মেনে চলার নিয়ত করবে এবং অন্তর থেকে ভালোবাসা প্রকাশ করবে, তার দরুদই হবে সর্বোত্তম।
দরুদ পাঠ আমাদের হৃদয়কে প্রশান্তি দেয়, গুনাহ মাফ করায় এবং নবীজীর (صلى الله عليه وسلم) সুপারিশ লাভের মাধ্যম হয়। তাই দরুদ কেবল ঠোঁটে নয়, হৃদয়ের গভীর অনুভূতি ও ভালোবাসা নিয়ে পাঠ করাই প্রকৃত সার্থকতা।
দরুদ শরিফ
আরবি:
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا تُحِبُّ وَتَرْضَىٰ لَهُ
অর্থ: “হে আল্লাহ, আপনি এত পরিমান রহমত প্রেরণ করুন নবীজি এবং উনার পরিবারের উপর, যত পরিমান আপনি উনাকে ভালোবাসেন ও উনার প্রতি সন্তুষ্ট।”
হাশরের ময়দানে দরুদ শরিফের ফজিলত:
রাসুলুল্লাহ (صلى الله عليه وسلم) বলেছেন—
“إِنَّ مِنْ أَقْرَبِكُمْ إِلَيَّ مَنْزِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُكُمْ عَلَيَّ صَلَاةً فِي الدُّنْيَا.”
(তিরমিজি: ৪৮৪)
“তোমাদের মধ্যে যারা কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে, তারা হলো সেইসব ব্যক্তি যারা দুনিয়াতে আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠ করেছে।”
(তিরমিজি: ৪৮৪)