শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠকের পর শনিবার সকালে ইসরাইল সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ইসরাইলের সরকার একটি যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি চুক্তি অনুমোদন করেছে। এরফলে রবিবার থেকে চুক্তিটি কার্যকর হওয়ায় আর কোন বাধা নেই। ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় কিছু কট্টরপন্থি নেতা এই চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করলেও নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী চুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে আটজন এর বিরোধিতা করেছেন বলে জানায় আলজাজিরা।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সমস্ত রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও মানবিক দিক পর্যবেক্ষণের পর এবং প্রস্তাবিত চুক্তি যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনকে সমর্থন করে’ এটা বোঝার পর চুক্তিটি গ্রহণ করেছে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ‘সরকারকে প্রস্তাবিত রূপরেখা অনুমোদন করার’ সুপারিশও করেছে। রয়টার্স জানায়, চুক্তিতে ছয় সপ্তাহের তথা ৪২ দিনের একটি প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
চুক্তির শর্তের মধ্যে রয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে ধীরে ধীরে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে এবং হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদেরও মুক্তি দেয়া হবে।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, ইসরাইলের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় পৃথক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দেশটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এদের মধ্যে ৬৯ জন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১০ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ৯৫ জনের নামও প্রকাশ করেছে বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস, যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষ রয়েছেন। চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের বিষয়ে আলোচনা প্রথম ধাপের ১৬তম দিনের মধ্যে শুরু হবে। সেখানে অবশিষ্ট সব ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। তৃতীয় ধাপে অবশিষ্ট মৃতদেহগুলোর ফেরত দেয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এই কাজ মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।