সময়ের সংবাদ ডেস্ক | মুসলিমদের জিহাদ
বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় যে আইন, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের কথা বলা হয়—তা কেবলমাত্র মুসলিম জাতির ওপরপ্রয়োগের জন্য ব্যবহৃত এককপক্ষীয় ও পক্ষপাতদুষ্ট অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব নিজেদের তৈরি করা আইনকে সর্বজনীনবলে দাবি করলেও, বাস্তবে তা কেবলমাত্র মুসলিমদের দমনে ব্যবহার করা হয়। কাফের রাষ্ট্রগুলোর যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, বেসামরিক হত্যাকাণ্ড বা নির্লজ্জ দখলদারিত্ব নিয়ে কখনো আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার হয় না, কিন্তু একজন মুসলমানইসলামের দাওয়াত দিলেও তাকে ‘উগ্রপন্থী’ বা ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়া হয়। অথচ প্রকৃত মুসলমান কখনোই সন্ত্রাসী হতে পারেনা। কারণ ইসলাম এমন একটি ধর্ম, যা একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করাকে পুরো মানবজাতিকে হত্যার সমান বলে ঘোষণাদিয়েছে। তাই প্রকৃত মুসলমান কখনোই অন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে পারে না, বরং সর্বদা ইনসাফ ও শান্তির পক্ষে থাকে।
পশ্চিমা বিশ্ব আজ “গণতন্ত্র” ও “মানবাধিকার” এর মুখোশ পরে মুসলিম দেশগুলোতে ঢুকে পড়ছে। ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন—যেখানেই তারা গেছে, সেখানেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট আর বিভাজনঘটিয়েছে। অথচ যখন এসব হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ ওঠে, তখন তারা নিজেদের কর্মকাণ্ডকে “আত্মরক্ষা” কিংবা “সন্ত্রাসবিরোধীঅভিযান” বলে চালিয়ে দেয়। অন্যদিকে, যদি কোনো মুসলিম রাষ্ট্র তার মোকাবিলার জন্য শক্ত অবস্থান নেয়, তখন সেটিকেবলা হয় “স্বৈরতন্ত্র”, “উগ্রবাদ” কিংবা “মানবাধিকার লঙ্ঘন”। এই দ্বিচারিতার কোনো সীমা নেই। তারা আইন তৈরি করে, আবার নিজেদের ক্ষেত্রেই সেই আইন অকার্যকর করে ফেলে। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকাও একই রকম। তারা কাফেরদেরঅপরাধকে গ্লানিমুক্ত করে তুলে ধরে, অথচ মুসলমানদের ন্যায্য প্রতিরোধকেও সন্ত্রাস বলে চালিয়ে দেয়।
এই বাস্তবতা প্রমাণ করে যে, তথাকথিত আন্তর্জাতিক আইন এবং গণতন্ত্র মূলত কাফেরদের শোষণ–নিয়ন্ত্রিত একটি জাল, যারফাঁদে কেবল মুসলিম উম্মাহকেই বন্দি করে রাখা হয়েছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে মুসলিম জাতিকে বুঝতে হবে—জুলুমকখনো চিরস্থায়ী হয় না। সময় এসেছে ইসলামকে একমাত্র মুক্তির পথ হিসেবে গ্রহণ করার। কারণ একমাত্র ইসলামই এমনএকটি শাসনব্যবস্থা, যা ইনসাফের মাধ্যমে সকল মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করে, কাফের–মুসলিম নয়—মানুষকে মানুষহিসেবেই বিচার করে।
…এই বিশ্বব্যবস্থায় মুসলিমদের ওপর কাফেরদের ক্রমাগত যুলুম ও শোষণ প্রমাণ করে দিয়েছে—দুনিয়ার তথাকথিত গণতন্ত্রও মানবাধিকারের সব কথা আসলে একচ্ছত্র ভণ্ডামি। আজ মুসলিম জাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে। শুধু শরীরিকভাবে নয়, বরং আত্মিক ও আদর্শিকভাবে আমাদের ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে। এই সংকটময় মুহূর্তে একমাত্র মুক্তির উপায় হলো—আমাদের ইসলামী আত্মপরিচয়কে পুনঃজাগরণ, নবী ﷺ প্রদত্ত আমানত ‘উম্মাহ’র চেতনাকে বুকে ধারণ, এবং আল্লাহরউপর তাওয়াক্কুল করে কাফেরদের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
আসুন, আমরা ফিরে যাই সেই চেতনাতে—যেখানে ‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’ ছিল মুসলিম উম্মাহর ইজ্জত রক্ষার ঢাল।আসুন, আমরা উম্মাহ হিসেবে একত্র হই—জাতি, ভাষা বা অঞ্চল নয়, কেবল ঈমানের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হই।
আজ সময় এসেছে স্বসস্ত্র জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়ার—কাফের দুনিয়ার শোষণ, আগ্রাসন ও মুসলিম–বিদ্বেষী নীতির বিরুদ্ধে।আমাদের নবী (ﷺ)-এর প্রদর্শিত পথ, সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ এবং শহীদদের রক্ত আমাদের ডাকে। হে আল্লাহ! তুমিআমাদের সাহায্য কর, তুমি আমাদেরকে দ্বীনের জন্য কুরবানি দিতে সক্ষম কর, তুমি আমাদের বিজয় দাও।