ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যেও হামলা বন্ধ না হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যা সেখানে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) গাজা সিটির শুজাইয়া পাড়ায় একটি ইসরায়েলি ড্রোন বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই সময় হতাহতরা তাদের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। এতে একজন নিহত এবং অপর একজন গুরুতর আহত হন। যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেই এই হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন ফিলিস্তিনি উদ্ধারকর্মীরা। গত ২৪ ঘণ্টায় তারা আরও ছয়টি লাশ উদ্ধার করেছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪৮,৪৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া, ১,১১,৮৫২ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
যদিও গত ১৯ জানুয়ারি থেকে তিন-পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, যার মধ্যে বন্দি বিনিময়, স্থায়ী শান্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, কিন্তু বাস্তবে এই চুক্তি মানা হচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, প্রতিদিনই ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে, যার ফলে হতাহতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অবকাঠামোর ৬০ শতাংশ ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যুদ্ধের কারণে খাদ্য, চিকিৎসা এবং আশ্রয়ের অভাবে ফিলিস্তিনিরা ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়েছেন।
আন্তর্জাতিক মহল গাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে। তবে সংঘাত বন্ধের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। গাজায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি